ফেসবুকে পাঠক বললেন - “কবি কুর্নিশ!! আহা কি কথার মূর্ছনা....” বলেই শুনিয়ে দিলেন নিজের লেটেস্ট থেকে খানিক....
একি! পিঠ চুলকোলাম যে! আপনার হাত আবার থামল কেন? বাংলা কাব্য , ও সব নাকি চু-কিত কিত খেলা।
বাবা: ! অফিস-টফিসের পর আবার কবিতাও লেখো ! সময় বের কর কি করে! কিচ্ছু কাজ নেই অফিসে , না? তা , বই টইও আছে কিছু? দিয়ো তো কমপ্লিমেন্টারি একটা ; মিসেস কে দেব। ও তো আবার একটু কাব্য টাব্য...
হেঁ হেঁ...বাংলা কবিতা !! পাঠক বড়ই কম-- একটু মার্কেটিংটা নিয়ে ভাব , বুঝলে হে ছোকরা। - একটা প্যারাসুট নিয়ে কবিতা আওড়াতে আওড়াতে ঝাঁপ মারলে কেমন হয়! “কি তীব্র জীবনবোধ কবি... আপনি জাদুকর, আপনি শব্দ শিল্পী”। - আর আমি শংকর, বাংলা কাব্যের দুর্ভেদ্য জঙ্গলে।
কেউ কি কোথাও আছেন, যিনি কখনও ভালোবেসে কবিতা পড়েননি কোনওদিন... আসুন না, খোলা মন নিয়ে -- একদিন বসা যাক তিন জনে আমি , আপনি আর বাংলা কবিতা। একবার দেখুনই না , আপনার প্রাত্যহিক জীবনের থেকেও ওরা বেশি কঠিন কিনা!
কন্ডাক্টর
দাদা , সিটি কলেজ থেকে হাওড়া ছ টাকা না ! - তো কত নিলাম ? টিকিটটা দেখি তো দিদি ভাই--
ভিড় বাস ; উঃ , শালা পা চেপে দিল একটা বেয়াক্কেলে ছোঁড়া। আর সামনে আমহার্স্ট স্ট্রীটের মোড় জুড়ে গাড়িদের নেভার এন্ডিং হর্ন হর্ন খেলা; অক্লান্ত শব্দ মিছিল। " আরে খুচরো দিলাম যে কুড়ি টাকার, দেখি... "
হে সহনাগরিক, অষ্টাদশী বাড়িয়েছে হাত খুলে গেছে সম্পর্কের সহজ মুঠো; অভিজ্ঞ চোখ গুনছে পাপ-পুণ্য , ভুল-ভ্রান্তি, বন্ধুতা। - হ্যাঁ আরও দু টাকা পাবেন আপনি এবার ঠিক আছে তো দিদি ভাই -- ভুল হয়েছে।
"ভুল হয়েছে" কি অকপট , কি সপাট; কি সহজ ! মোটে দুটো তো কথা-- খরচ হলেই হয়তো তোমার কাঁধে কাঁধ মেলাত আরও দশটা লোক। নষ্ট হত না লক্ষ লক্ষ ঘৃণায় কেনা কান্না গুলো ; এদিক ওদিক....
লাশ
একটা শিশু, নির্জীব হয়ে বসে আছে... গা ভর্তি মাখা বেবি জনসন ধুলো। গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে মধ্য প্রাচ্যের যুদ্ধের রঙ। চোখ দুটো কালো মেঘের মত ভারি ; জল ঝরতে চায়। চেয়ারে হেলান দেওয়া , ছেঁড়া পুতুল যেন ! ওর বাবাকে মেরেছে একটা গরম বুলেটের তীব্র প্রেম আর মা কে ছিঁড়ে খেয়েছে প্ৰথমে কয়েকটা ভুখা নেকড়ে, তারপর লাল টকটকে একটা ধারালো বেওনেট।
এখন চারপাশ বড় চুপচাপ ; ঠিক একটা পাথরের মূর্তি যেন-- ওর মুখ মুছিয়ে দিচ্ছে একজন মরমী যুবতী; এরপর ও চকলেট পাবে, এক গ্লাস গরম দুধ পাবে UNO পাবে, আমেরিকার সিটিজেনশিপ পাবে... আর সারা জীবন মাঝ রাতে পাবে ভয়। কয়েকটা উন্মত্ত শ্বাপদ তেড়ে এসেছিল মায়ের দিকে, আর ছিবড়ে করে ছেড়েছিল ওর হামাগুড়ির দিনগুলো..