গানফাইটারে শুভা



সোনালী মিত্র






হাংরি আপনি বিয়ে করলেন কেন ?

আরও হাজার দু'হাজার যোনিবৎসর

শুভা'র পয়মন্ত আপেলের দিকে ফিরে কাটিয়ে দিতে পারতেন ,

তরমুজ ফ্যালফ্যাল করে দিতে পারতেন রক্তাক্ত ।

শুভার সমুদ্র মন্থিতদণ্ড কী প্রত্যাশার পারদ ছিল

যে বিয়ের মধ্যে যুগান্তকারী হয়ে উঠলো ভারতবর্ষ !

কেঁদো না শুভা , কবি ও প্রবঞ্চকের ভিড়েঠাসা শব্দে

যতই নর্দমায় ভেসে যাক বীর্যপাত , মুখে খই ফুটিয়ে

ক'টা শব্দের কাঁটাছেঁড়া চলতে থাকুন তোমার নালন্দাস্তন নিয়ে

যতই তোমার জ্যামিতিক রেশম পশমের গন্ধে মাতোয়ারা ধানীচোখ

নির্লিপ্ত এগিয়ে যাক সৃষ্টির গুহ্যদ্বারের দিকে

তুমি ও তো জানো শুভা , তুমি তো জানো ভণ্ড

জগতের বিপ্লবপুরুষ নয় , তুমি তো জানো

শ্মশান , আগুন , ছাইয়ের পাশে পরিত্যক্ত লাশের বস্ত্রের পাশেই

থোকাথোকা ফুল ফুটে আছে সৃষ্টির আদিঅন্ত জুড়ে ,

মৃত্যুর উপত্যকায় যে ফুল ফুটে আছে তাকে গ্রহণ করে কি বলবে না

কবি , তুমিও রক্তমাংসের , তুমিও রক্তের

##

হাংরি আপনি বিয়ে করলেন কেন ?

শুভা কেঁদো না । আদিশূন্য বদ্বীপের মধ্যে মধ্যে শব্দের

তপ্ত লৌহদণ্ড ঢুকিয়ে দেওয়া সহজ ক্রিয়া

বোধের মধ্যে মৃত মাছের হাড়গোড় , পশুর চামড়া

মাংসের ঝোলের মধ্যে লাললঙ্কা দিলে রঙে ও স্বাদে

অতুলনীয় হয় বুঝে রাঁধুনি

তোমার শরীর ছুঁয়ে থাকলে কবিতারা হাংরি হয় বুঝে

কবিতা লেখা হয় , কবিতারা সেখানে রসনার

কবি , এবার বিয়ে করলে বটে !

শুভা , কেঁদো না মেয়ে !

তোমার শরীরী অক্ষাংশে পরিচালন বৃষ্টিপাতের গরমফোঁটা

ট্যারেন্তুলা বিষ সৃষ্টি করে মনের আঁধারে

কবি অসহায় , কবি মরে যেতে যেতে শারীরিক উদ্বেগের লক্ষণ

দিয়ে যেতে চায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে

কবি বিকৃতকাম শব্দসংযোজনে অমৃত ছিটিয়ে দিচ্ছে ভেবে

তুমি কেঁপে উঠলে ? কান্না তোমায় মানায় না

যাদের জন্ম জলে তারা কোনোদিন ডুবে মরে না

তুমি কাঁদলে , কবিতার অক্ষরে দেখি মৃত নাভির মাস

#

মা , চোখের জল মানায় না তোমায় ।

হাংরি বিয়ে করবে পৃথিবী না জানলেও তুমি জানতে বল ?

তুমিও তো কোনও সেই প্রবীণা শুভা ,

তবু , তাকে নিয়ে এসেছিলে দাম্ভিক আষাঢ়ে

বাবা অন্ধরাতে বলেছিল , এসো বীর্যবন্ত নারী , রক্তবীজ থেকে

রূপান্তরিত হোক সূর্যমুখী হ্যাংরি ফুল !

বাবা তোমাকে নর্তকী ভেবেছিল ঘুঙুরে গানের তাল ?

ভেবেছিল নক্ষত্র পুড়ে যাওয়া আকাশে নীচে শুয়ে

যে , তুমি একটা মাংসের শরীর , চোখ নেই

মুখ নেই , জিহ্বা থেকে খসে গেছে কথাগাছ !

বাবাকে তুমি এত আলোকযুগ ধরে সহ্য করে এলে কেন তবে ?

তার পশুঅঙ্গ নেতিয়ে গেলে

তাকে একটা ছাগল , গরু অথবা জানোয়ার ছাড়া

যে নামেই ডাকো , সেই ডাকে উত্তর দেবে পুরুষ ।

তুমি স্বপ্নে দেখেছিলে নদের নিমাই নেমেছে জরায়ুর দিকে ?

মাইয়ে মুখ রেখে বলল তখন সে ?-- -- মা অমৃত দাও , একটু খাবো ?

কান্না মানায় না মা , কান্না মানায় না

ঘনিষ্ঠ বাস্তবের কাছ এলে বাঘ - হরিণ একঘাটে জল খায় সত্যি হতে পারে

তাহলে হাংরি বউ নিয়ে সন্তানে সন্তানে

ভারততীর্থ করবেন না ভাবলে কী করে ?

শুভা'কে উপেক্ষা করার মুর্খামি ভুলিয়ে দিয়েছে রত্নগর্ভা

আইন নিদিষ্ট স্তনে এখন হাংরি পয়গম্বর

আর শিল্পকলায় উঠে আসবে জীবিত ভুতের আসর

#

বাবা , ক্ষমা করে দেবে হাংরি রসাতল !

কবিতা ও বাবা হয়েছেন , কবিতা ও স্বাবলম্বী

তুমি বাথরুমে ভাসিয়ে দাওনি দাহ্যরূপী শরীরী নির্যাস

ধর্ষণ করেছিলে কোনও গন্ধরমণীকে বলেই হাজার হাজার হাংরি জোনাকি

মিটমিট করছে নারী বুকের কাছে আঁচলের কাছে !

আরও একশত পূর্বেকার পিতা ক্ষমা করে দিয়েছিলেন অকালকুষ্মাণ্ড

হাত যেভাবে ক্ষমা করে দেয়

চীজ মাখা পাউরুটির উপর গু-মাড়িয়ে বসে থাকা নীলাভ মাছি

সেইভাবে পৃথিবীর সব বাপ ক্ষমা লেখে সন্তানের কপালে

মাটির প্রদীপ যেভাবে তেলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়

প্রদীপ জ্বালিয়ে

#

শুভা কেঁদো না , অস্বীকারের পর্যায়ের মধ্যেই স্বীকারের

অভিব্যক্তি থাকে জলের মধ্যে ফ্যানার ধর্মের মত

সে অস্বীকার করেছে তোমাকে নয় , আসলে অস্বীকার করতে

চেয়েছেন নিজেকে , নিজের রুস্তমকে

তবুও দেখো জীবনের সব অনুভূতি শব্দবন্দী করতে গিয়ে

নিজে কেমন সাপলুডোতে বন্দী হয়ে

আমৃত্যু একটা পথে চলতে চলতে , ক্লান্ত ?

শুভা কেঁদো না , কেঁদো না

হাংরি বিয়ে করলেন ঘটনার সামনে কবিতা কেঁদে ওঠে না

যোনিকে আজও অতিক্রম করতে পারেনি সামাজিক শ্বেতকেতু

শ্বেতকেতুর দেখানো পথে সময় আসে কবিতা আসে

অমরত্ব আসে

কবি আসে , কবি যায়

শুভা তোমাকে নগ্ন করতে পারেনি কোন হ্যাংরি

সব কবিই ঋষি প্রত্যাবর্তনের ভূমিকা গ্রহণের মাধ্যমেই

ভুলতে পারেনি পূর্বশ্রম , ভুলতে পারেনি দ্বিচারিতার ভূমিকাদোষের

মধ্যে তার বাস্তবতা , ভুলতে পারেনি উদ্বেগের অঙ্গ কোন

শুভা নয় সর্বাধিক ধারণ করে রাখবেন বউ

শুভা , কেঁদো না , নগ্ন হয়েছে প্রেমের কবিতা