নিজ নিকেতনে

নীলাশিস ঘোষদস্তিদার




পিছনে আরো দু তিনটে গ্রামীণ সেবা ফটফটি দেখা দিয়েছে। তাই, ঠেসে লোক ভরা মুলতবী রেখে গাড়ি ছাড়বার সঙ্কেত দিয়ে লাফিয়ে নিজেদের গাড়িতে উঠে পড়ল গনু।স্কুলে কোন আবছা অতীতে ভর্তি হওয়ার সময় নামটা বুঝিবা ছিল গণেশ। এখন গনু।নেহরু প্লেস আগে পৌঁছলে আগে ফিরবার নম্বরও পাবে। আর, বেশ কিছু প্যাসেঞ্জার এখনো তারা অ্যপার্টমেন্ট স্টপেজেও আছে। এখান থেকে যাও, আর ওখান থেকেই যাও, ভাড়া তো একই! ওখান থেকে গাড়ি ভরে নেওয়াই ভালো। তবে, তারা অ্যাপার্টমেন্টে দুটো গ্রামীণ সেবার ফটফটি দাঁড়িয়েই আছে, সুবিধা বিশেষ হল না। উপরিতে, গোবিন্দপুরীর জ্যামে আটকে গেল তাদের গাড়ি। ড্রাইভার রজনীশ খুব আগ্রাসী নয়। আটকেই আছে। জ্যামটা কেন লেগেছে, দেখছিল গনু। নজরে এল একটা ঠেলা রিকশা উলটে গেছে, চালক বেদম মার খাচ্ছে মোটরবাইক আরোহী দুটো ছেলের কাছে। পাশ দিয়ে গাড়ি বার করাবার পর একটু এগিয়ে পুরোটা দেখতে পেল গনু । মার খাওয়া রিকশাচালক হল তার বাবা, প্রভাস । তবে, ট্রাফিক পুলিশ এসে গেছে, লোকেরাও মারপিট থামিয়ে দিয়েছে।বাইকের নম্বরটা দেখার চেষ্টা করেও পারল না । দাঁড়াবার উপায়ও নেই।  

ফিরতি ট্রিপগুলোতে নেমে খোঁজ করার সময় হল না তাদের। গাড়ির প্রতিদিনের ভাড়া, সিএনজির পয়সা তুলতেই হিমসিম অবস্থা, দিনের কামাই তারপর। সন্ধ্যায় শেষ ট্রিপের পর ফিরতি পথে গোবিন্দপুরীতে রজনীশকে একটু দাঁড়াতে বলে একটু খোঁজাখুঁজি করেও কোন খবর না পেয়ে ফিরে আসছে সে, এক পরিচিত জানাল বাইক আরোহীরা নাকি প্রহ্লাদপুরের দিকের ছেলে। বাইকটাই এসে ধাক্কা মেরেছে ঠেলাকে, তারপর চালককে নিরীহ লোক পেয়ে বেধড়ক ঠেঙিয়েছে। গা গরম হয়ে গেছে গনুর। গাড়িতে ফিরে চুপচাপ বসে আছে আর বড় বড় শ্বাস ফেলছে দেখে রজনীশ জিজ্ঞাসা করল কি ব্যাপার। সবিস্তার বলতে যাচ্ছিল গনু। বাধা দিল রজনীশ। রিভার্স মিররে সে সব দেখেছে।বাইকের নম্বর ইত্যাদি পিছন ফিরে ভালো করে দেখে মনে করে রেখে পরে লিখে রেখেছে। বাইক আরোহীদের দেখলে চিনতেও পারবে । কৃতজ্ঞতায় গলে গেল গনু। রজনীশ খুব আগ্রাসী ড্রাইভার নয় হয়ত, কিন্তু, কাগজপত্রের ব্যাপারে খুব সজাগ। প্রদূষণ ইত্যাদির ব্যাপারে কখনো তাদের চালান খেতে হয় না। আর, তার মন ভালো। ফাঁক পেলেই গনুকে সে গাড়ি চালানো শেখায়।সুযোগ পেলেই সে কোন ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভারি করবে নাকি। সেক্ষেত্রে গনু ড্রাইভার হয়ে যাবে। 

দাদার বিয়ে হবার পর ভুমিহীন ক্যাম্পের ঝুগ্‌গি থেকে সঙ্গম বিহারের কাছে এই আনঅথরাইজড কলোনির ব্যারাকের মত লম্বা ভাড়াবাড়িতে চলে এসেছিল গনুরা।তার আগে অবশ্য তারা থাকত ছত্তিসগড়ের পাকানজুড় এলাকার বঙ্গালী রিফিউজি কলোনিতে।এখনো গনুর ঠাকুর্দা এক কাকার সাথে পড়ে আছে সেখানে, চাষবাস নিয়ে।গনুর মামাবাড়ি পুরোপুরি আস্তানা গুটিয়ে এসে গেছে দিল্লিতে, তার মা প্রবলভাবে চেয়েছিল বলেই তারাও এসেছে। কিন্তু, মুশকিল গনুর বাবাকে নিয়ে। সে আদতে চাষি এবং, নিজেকে কিছুতেই খাপ খাওয়াতে পারছে না দিল্লির সাথে। এই নিয়ে বার পাঁচ ছয় কাজ পাল্টাল, কোথাও সাফল্য নেই। অথচ গনুর দাদাকে দ্যাখো, চালাকচতুর, তুখোড় ইলেকট্রিশিয়ান। ভালো কামাই। বাপ মাকে অবশ্য তেমন কিছু ঠেকায় না। গনুর মা খুব শক্তপোক্ত নয়, বেশি বাড়িতে কাজ করতে পারে না আর প্রায়ই অসুখের দরুন কামাই করে বলে কাজ খোয়ায়। তাই, গনুর বাপ প্রভাসের উপর চাপ থাকে নিরন্তর, কামাই করে আনার জন্য। গনুর দিদি ভালো রাঁধে, ভূমিহীন ক্যাম্পে থাকার সময় সে কাছেই কালকাজীতে তিন চার বাড়ি রান্না করে ভালো রোজগার করত।তারপর সে এক ওড়িয়া প্লাম্বারকে বিয়ে করে পালাল পশ্চিম দিল্লিতে। তার অবশ্য অবস্থা ভালো, নিজের উপার্জনও আছে।মাস গেলে বাপ-মাকে সে কিছু পাঠায় বলে তাদের মাছ ভাত জোটে।অবস্থা দেখে গনু আর তার ভাই সোনু স্কুল ছেড়ে কাজে লেগে গেছে।তবে, তাদের মা লেগে থাকে প্রভাসের পিছনে, যাতে সে দিল্লির একজন হয়ে উঠে যেন নোট কামিয়ে আনতে পারে।

এই যেমন, মেয়ের পাঠানো টাকায় সংসার চলছে, রোজকার এই গঞ্জনার সাথে আজ যোগ হয়েছে ঠেলা ভাঙার দরুন লোকসান ও কাজটা হারানোর দরুন হা হুতাশ। সাথে পাল্লা দিয়ে সঙ্গত করে যাচ্ছে হাঁদু মণ্ডল। এই লোকটাকে দুচোখে দেখতে পারে না গনু বা সোনু। তাদের মা বাবার মধ্যের নিত্য ঝামেলার মধ্যে এক বড় কারণ এই লোকটার উস্কানি, তারা ছোট থেকে দেখে আসছে। সোনু মাথা গরম ছেলে। সে মাঝে মধ্যেই হাঁদুকে উত্তম মধ্যম দেবে ঠিক করে, গনু সামলে রাখে তাকে। আজ অবশ্য ঘরে ঢুকে আবছা আলোয় ঘরের কোণে মাটিতে বসা বাবার নুয়ে পড়া মাথা দেখে ভারী কষ্ট হল তার। বাবার মুখ তুলে ধরে দেখল সে, হ্যাঁ, কালশিটে আছে, ঠোঁটের কোণে ফোলা, রক্তের দাগও আছে। সোনুকে বলতেই সে ছুটে তুলো ভিজিয়ে আনল। দুই ছেলের শুশ্রূষায় প্রভাসের চোখ জলে ভরে এল। গনুদের মা এতক্ষণ জুল জুল করে দেখছিল। এবার হঠাৎ ঝাঁঝিয়ে উঠে সে নয়া গঞ্জনা শুরু করল।কোন কাজের নয় তার স্বামী, লোকসান তো খেলই, এবার কোনদিন মার খেয়ে বেঘোরে প্রাণ দেবে, তার কপালই পোড়া ইত্যাদি। হাঁদুও মুখ খুলতে যাচ্ছিল, কিন্তু, অন্যদিন সোনুর চোখে যা দেখা যায়, আজ গনুর চোখে সেই ছায়া দেখে মানে মানে কেটে পড়ল সে। প্রায় বিগতযৌবনা, ক্ষয়াটে চেহারার বৌদিকে উস্কানি দিতে গিয়ে দুই উঠতিযৌবন চ্যাঙড়ার হাতে ঠ্যাঙানি খাওয়া সুখকর হবে না, তার মত লম্পটরা জানে। 

রাতের খাওয়ার পর সোনুকে বাইকের নম্বর ইত্যাদি দিল গনু। সোনু ভালো খেলে, তার প্রচুর চেনাশোনা। হয়ত পাত্তা লাগাতে পারবে। আর, ঘুমোনোর আগে কালকা মাতার কাছে প্রার্থনা করল যেন জলদি সে ড্রাইভার হয়ে যায়, সোনুও মন দিয়ে প্লাম্বিং-এর কাজ শিখে ভালো প্লাম্বার হয়ে যায়। কাজ করতে না পারার গঞ্জনা যেন বাবাকে না পেতে হয়। 

পরদিন রবিবার। আজ গনুদের গাড়ি চলে না। তবে, গাড়ি মালিক সুরেশ ভড়ানা তাদের একটা কাজ দিয়েছে।তারা রওনা হয়েছে একটা ছোটা হাতি পিক আপ ভ্যান নিয়ে।সুরেশের জীজা অর্থাৎ জামাইবাবু দিল্লির মস্ত উকিল, বল্লভগড়ের কাছে তার পৈতৃক গ্রাম।সেখানে এসে দিব্যি লাগল গনুদের। জমিজমা প্রায় সব অধিগৃহীত হয়ে গেছে ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোরের কাজে।একর দুই তিনেক জুড়ে একটা ছোট কম্পাউণ্ড ঘেরা ফার্ম। ছোট পুকুর, অল্প কিছু ফুল-সব্জির কেয়ারি আর একটা ছোট সুন্দর ফার্মহাউস। সুরেশের জীজারা মাঝে মাঝে এসে থেকে যা্ন। একজন ছোকরা ম্যানেজার ছিল, বল্লভগড়ে থাকে, জীজাজির ল ফার্মেও কাজ করে।খেত থেকে তুলে রাখা ফুল আর শাক-সব্জি তাদের ছোটা হাতিতে বোঝাই করছিল একজন বুড়ো থুত্থুরে লোক, তার সঙ্গে সে হাত মিলিয়ে কাজও করছিল আর তুমুল গালি দিয়ে ডাকছিল কোন নরেন্দরকে। দেরি হচ্ছে দেখে গনুও হাত লাগাল। রজনীশ ছবি তুলে বেড়াচ্ছে। নরেন্দরের উদ্দেশ্যে বর্ষিত গালির বহর দেখে গনু কৌতূহলী হয়ে জানতে চাইল ব্যাপার কি। ছোকরা ম্যানেজার কাঁধ উঁচিয়ে জানাল এই বুড়ো আসলে বহুদিনের চৌকিদার, নরেন্দর হল ফার্মের মালি কাম মজদুর। ভাল কাজ করে, ভাল বেতন পায়, থাকার সুন্দর জায়গাও আছে। কিন্তু, তার দিমাগী সন্তুলন খারাপ, অস্থিরচিত্ত, তায় বদমেজাজী। বেশ কয়েকবার কাজ ছেড়েছে, বাবা বাছা করে ডেকে আনা হলেও ঝগড়াঝাঁটি করে পালায়। এবার একদম তুলকালাম লড়াই হয়েছে মালিকের সাথে, চলেই যাচ্ছে, আর ফিরবে না। অন্য ভালো কাজ জানা লোক চাই, নাহলে ফার্ম বরবাদ হয়ে যাবে।স্থানীয়দের দিয়ে হবে না, অতীতে তারা অনেক হুজ্জত করেছে। এখন, মালিক তো নির্দেশ দিয়েই খালাস, সে নরেন্দরের বদলি পায় কোথায়।  গনু ছোকরা ম্যানেজারের ফোন নম্বর নিয়ে নিল।

ফার্মের ফুল-শাক-সব্জি তারা নামিয়ে এল সুরেশের জীজাজির কৈলাশ কলোনির কোঠিতে।বেশ কটা বড় গাড়ি দাঁড়িয়ে। সুরেশের গাড়ি বলামাত্র গেটের সিকিউরিটি খাতির করে তাদের ডেকে নিয়ে গেল ভিতরে। মাল খালাস করতে এল ভিতর থেকে লোকেরা। জানা গেল ফার্মের তাজা ফুল-শাক-সব্জির বিরাট চাহিদা আছে, পাঠানো হবে শাঁসালো মক্কেলদের। ফিরতি পথে রজনীশ জানাল এরকম লোকের গাড়ি চালাতে পারলে সে ধন্য হয়ে যাবে। তবে, একটু ইঞ্জিরি বলা শিখতে হবে নাকি! কথাটা গনুও জানে। ইংরাজী বলতে পারা ড্রাইভার হেসে খেলে মাসে তিরিশ চল্লিশ হাজার টাকা কামায়, এমন নমুনা তাদের কলোনিতেই আছে। 

রাতে প্রভাসকে ছাদে নিয়ে গিয়ে কথাটা বলল গনু আর সোনু। আর, দুদিনের মাথায় বল্লভপুরের ফার্মে দাদার থেকে চেয়ে আনা বাইকে করে এসে হাজির হল গনু। পিছনে ব্যাগ কাঁধে জড়সড় প্রভাস।ছোকরা ম্যানেজার খানিক ইন্তারভিউ নিয়ে হাসিমুখে গনুকে বলল, ‘ডান, ইয়ে চলেগা’। গনু মনে মনে মুচকি হাসল। তাদের পাকানজুড়ের জমি বড়জোর একর চারেক। কিন্তু, প্রতি বর্গইঞ্চি সুফলা, সযত্নরক্ষিত, দেখে আয় বাপ। প্রভাসকে যে কামরায় থাকতে দেওয়া হল, সেটা বেশ বড়সড়, গদিসমেত খাট আছে, আবার সাথে ছোট রান্নার জায়গাও আছে। বৃদ্ধ চৌকিদার একগাল হাসি নিয়ে প্রভাসকে বাথরুম ইত্যাদি দেখিয়ে আনল, এখন প্রভাসের মুখেও আলগা হাসি।বেতন শুনে বেশ চমকাল প্রভাস, এতটা সে আশা করেনি। পরের রবিবার আবার আসবে, জানিয়ে বিদায় নিল গনু। 

পরের রবিবার অবশ্য সাতসকালে তাকে দৌড়তে হল তুঘলকাবাদের মাঠে। সোনু ক্রিকেট খেলতে গিয়ে মাঠের পাশে অনেক বাইকের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত নম্বর খুঁজে পেয়ে, বাইকওয়ালা ছেলেদের ধরেছে। তাদের ছবি তুলে পাঠিয়েছে রজনীশকে। রজনীশ তাদের চিনতে পেরেছে। তারপর সোনু ডেকেছে গনুকে। যখন গনু পৌঁছল, ততক্ষণে প্রভাসের গায়ে হাত তোলা ছেলেদুটো বেধড়ক ঠাঙ্গানি খেয়ে মাটিতে শুয়ে। তাদের সঙ্গীসাথী কখন পালিয়েছে।গনু আসার পর একটা স্টাম্প তার হাতে দিয়ে হাতের সুখ করতে বলল সোনু। একটা করে ঘা খেতেই ছেলেগুলো এমন পরিত্রাহি চ্যাঁচাতে লাগল যে গনু আর মারতে পারল না। হাতে পায়ে ধরছে ওরা। সোনুকে বলল ছেড়ে দিতে। ছাড়া পাওয়া মাত্র অদৃশ্য হয়ে গেল ছেলেদুটো। 

সন্ধ্যাবেলায় এক থলি পালং-বাথুয়া-সর্ষে শাক নিয়ে বাড়ি ঢুকল সে। সবার পছন্দের শাক। তার মা ভুরু তুলে কিছু প্রশ্ন করতে গিয়েও করল না। দেখতে দেখতে সপ্তাহ তিনেক কাটল। গনুর ড্রাইভিং-এর হাত ক্রমশ সাফ হচ্ছে। রজনীশ তাকেই ধরেছে, ভকিল সাব ফার্মে এলে রজনীশকে ড্রাইভার রাখার জন্য যেন সুপারিশ করে ছোকরা ম্যানেজার। রজনীশ, গনু, সোনু সবাই আজকাল সন্ধ্যাবেলায় কলোনির এক কোচিং ক্লাসে ইংরাজি বলা শেখে। 

ছোকরা ম্যানেজার ডেকেছে, রবিবার প্রভাসের বেতন হবে।বাড়িতে অবশ্য কিছু না বলে বাইকে স্টার্ট দিচ্ছিল গনু। অবিশ্বাস্য কম দামে এটা কিনে এনেছে সোনু । তার মা একদম তৈরি হয়ে এসে অনুরোধ করল, তাকেও নিয়ে যাওয়ার জন্য।ফার্মের দরজা খুলে গনুকে দেখে প্রথমে ঝকঝকে হাসি দিল প্রভাস। তারপর, হেলমেট খুলে দাঁড়ানো অর্ধাঙ্গিণীকে দেখে একটু হতবুদ্ধি হয়ে থেকে ভারী সলজ্জ হাসল। তার মা বলল, ‘কি চাষার ব্যাটা, ক্যামন চলে তোমার চাষ’? প্রভাস আবার ঝকঝকে হেসে তাকে খেতের রাস্তায় ডাকল, ‘এইদিক পানে আসো, দ্যাখাইতাসি’।

ছোকরা ম্যানেজার হতবুদ্ধি গনুকে বোঝাল, নরেন্দর উল্লু দা পাঁঠা কামচোর ছিল। মালিক এসে দেখে বলেছেন, হ্যাঁ, এখন ফার্ম দেখার মত হয়েছে। বেতন বাড়িয়েছেন, আগাম কিছু বোনাসও দিয়েছেন, যাতে প্রভাস প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে ভালোভাবে থাকতে পারে। আসন্ন শীতের জন্য কম্বল, জুতো, জ্যাকেট ইত্যাদিও। সেসব নিয়ে এসে বাবা মার পাশে দাঁড়ালো গনু। তার মা তখন রান্নার জায়গাটা দেখছে মন দিয়ে।জিনিসপত্র দেখে প্রভাস খুশি, চোখ চিকচিক করছে। তাকে আরও অবাক করে দিয়ে তার হাতে ত্রিশ হাজার টাকা তুলে দিল গনু। ব্যাপার শুনে, অর্ধাঙ্গিণীকে আর অবাক করে তার হাতে পঁচিশ হাজার টাকা তুলে দিল প্রভাস, ‘পোলাপানগুলানরে ভালমন্দ কিছু খাওয়াইও, সরলা। কুনদিন এত টাকা একলগে হাতে পাই নাই, খাওয়াইতে পারি নাই। মা কালী্র দয়া হইসে, আমাগো আর কষ্ট নাই’।