প্রতি অঙ্গ লাগি কান্দে প্রতি অঙ্গ মোর’

অঞ্জলি সেনগুপ্ত 


মধ্য রজনীর দুয়ার মুখ খোলে অবুঝ শীৎকারে
উঠে এলো বিমূর্ত বাসনা কার ? অপরূপ রমণী ,
সঙ্গে জ্ঞানদাস । আনত রূপদগ্ধ  , নিদারুণ
মন্মথ বাণ,  মুহুর্মুহু উন্মত্ত রমণেচ্ছা
প্রতি অঙ্গ লাগি  প্রতি অঙ্গের ক্রন্দন বিবসা । 

আত্মক্রীড় আত্মরামে  অকাম রিরংসা
উন্মত্ত মধুকর ,  হেঁটে যায় অদৃশ্য মায়াতরঙ্গে
 শ্যাম চিত্ত মোহিনী রাধিকা  ।
বাসনাবিন্দুর  ঘননাদে ব্যাকুল জলজ স্থির আর্তনাদ
ঊরুমূলে , মণিবন্ধে আঙুলের দশম যন্ত্রণার
অবরুদ্ধ ক্রদন , শৃঙ্গার কথার নিবৃত্তি সংবাদ ।

যতি ন্যাসী কাঁপে ব্যোম নাদে , -সোহম বৃষ্টি
ঝরে শস্যের বারমাস্যে , বাউল একতারায়
বাঁধে আউলিয়া সুর –‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’

প্রতি অঙ্গে  আর্তনাদের তীব্র কামড়  ,
              তর্জনী বৃদ্ধা অনামিকা
কনিষ্ঠা মধ্যমার পঞ্চমে বাজে বাঁশি সন্মোহিণী
 পৃষ্ঠ স্পর্শের দহন জ্বালা , কাঁহা বাঁকা বেণুকরী  !
এসো নাভিতে ডুবাও নাভি , কেঁপে উঠুক ভুধর
চেতনার চৈতন্য নামাও জলে স্থলে অন্তরিক্ষে 
সহস্রার ডঙ্কা ডমরু , আন্দারভেদি কুয়াশা শরীর
মাগে পরাপ্রীতি ! যোগ বিষামৃত

কবি জ্ঞানদাস পিরীতি আকর মালায় রূপের পাথারে ভরিল
আঁখি, রামীর উরুসন্ধি মূলে বিভোর  চণ্ডীদাস
লেখে জীবনের ভাষ্য ‘রাই তুমি সে আমার গতি’
অজয়ের জোয়ারজলে পদ্মাবতীর চরণ লেহে
প্রণত  জয়দেবের একটি নমস্কার –‘দেহি পদপল্লবমুদারম’ 

প্রতি অঙ্গে প্রতি অঙ্গ , ভাবে ভাব রসে রস
প্রেমের বিমূর্ত মূর্তি কাঁদে নদীয়ার পথে ...