শুভদীপ মৈত্র
Author / Editor : iPatrika Crawler

দৈনিক যাপন ও দ্রাব্যতা
১৩
কিছুটা দূর কিছুটা হাঁটাপথও (তোমার সকাশে যেতে)
শুঁড় তোলা নাগরার মতো মেঘই বাহন,
তারে মেলা জামা ছড় টেনে হাওয়ায়
সুর তোলে – মিয়া কী মলহার।
বৃষ্টি নামার আগে ও পরে তোমাদের
চা ও হাহুতাশ ভাল লাগে।
আমারও কথা দিতে ইচ্ছে করে কিছু,
সবজিঅলারা যেমন প্রত্যয়ে বলে – টাটকা।
তেমন উজ্জ্বল একটা টমেটোর মতো
কিছুটা দূর ও একটা হাঁটা-পথ
মনে মনে ভেবে তিন সত্যি করে নিতে পারি
এমন একান্ত অবেলায়।
১৪
কে তোমার সঙ্গে কথা বলে
আমি না সাইবর্গ?
বিদায় জানাতে গেলে
ফিরে আসে বাতিল খুচরো
অথচ ইলেকট্রিক বিল ছাড়া
আর কিছুই নেই তাই লেটার বক্সহীন
একটা হুররে একাকীত্ব
দাড়ি কামানোর সাবানের ফেনার মতো
পৌনঃপুনিক
তোমাদের মুখ ধুপের ধোঁয়ার মতো পাকিয়ে
খানিক মুচকি হেসে যায়
আমি শুয়ে থাকি আর সাইবর্গ ভাবে
কীভাবে সারা রাতের হুলাবিলায়
তোমাদের সঙ্গে সে যাবে
গোয়া বা ম্যাকলয়েডগঞ্জ
সে-সব ছদ্ম ভ্রমণ কাহিনি তোমরা লিখতে থাকো
আর আমি তার কাছ থেকে রেহাই পেতে
মাথার থেকে বের করে দিই সমস্ত
গতকালগুলো।
১৫
আজকাল স্বপ্নের ভিতর ফিরে আসছে একটা পুরনো দিনের বাড়ি
আর অজস্র বারান্দা অলিগলির মতো এক ঘর থেকে আরেক ঘরে
ঘুরে, জাফরানি আলো দিয়ে ছক কাটছে মেঝেয়।
ঠিক একইভাবে আমি দেখছি স্বপ্নের ভিতর
আরেক-আমি আরেক-তুমিকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল
আলো অন্ধকার বারান্দাময় পৃথিবীতে
যেখান থেকে শুধু বাগান দেখা যায় এক,
অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত।
বাড়ির ঠিকানাখানা স্বপ্নে ফেলে এসে
গমগম করে বেজে ওঠা – ‘চল মুসাফির চল
মোছরে আঁখি জল,’
মনে পড়াল – যেভাবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসল
চমকে বলে ওঠে কোথায় যেন যাওয়ার ছিল –
সেভাবেই এই কোঠা, দালান, প্রতিশ্রুত
পৃথিবীর থেকে ক্রমশ সরে এসে আমরা
পলেস্তারা খসতে থাকা বাড়ির মতো
শেষ সৌন্দর্যে বসত বেঁধেছি।