আমাদের সম্পর্কে
Author / Editor : আমাদের সম্পর্কে
দেহলিজ সম্পর্কে
আমরা যারা দিল্লির তরুণ, কবিতা প্রেমী,বহুভাষাবিবিধতার ভিতরে বসে বাংলায় কবিতা লিখি । দিল্লি ও পার্শবর্তী এলাকায় যে অগণিত বাঙ্গালি লেখক ,পাঠক ও অনুরাগীরা রয়েছেন,তাদের সঙ্গে কাজ করে চলেছি । বাংলার মূল ভূখণ্ড থেকে দূরে থেকেও বাংলাকে আঁকড়ে ধরে নিজেদের জীবন গাঁথা দিয়ে যারা রচনা করে চলেছেন এক-সে-বাড়-কর-এক ভাষাকাহিনী আখ্যান । দেহলিজ,সেই রকম একটা বাংলা,যা বহির্বঙ্গের বাংলা,মূল ভূখণ্ড থেকে দূরের বাংলা পত্রিকা । প্রতিকূলতার মাঝে নিজেকে টিকিয়ে বাঁচিয়ে রাখার নাম দেহলিজ । দিল্লির পূন্য সাহিত্যভূমিতে বহুভাষাভাষীদের মহাআরতীতে বাংলার প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখার নাম দেহলিজ ।
প্রথম প্রকাশ: দেহ্লিজ
দিল্লিস্থিত রবীন্দ্রভবনে অনুষ্ঠিত রবীন্দ্রজয়ন্তীতে প্রকাশ পেল প্রথম দেহ্লিজ । দেহলিজের প্রথম পাতা খুলে দিল্লির কবিতার প্রাণপুরুষ কবি দিলীপ ফৌজদারের হাতে তুলে দেওয়া হয় ট্যাব । কবিতার ফেরিয়ালার মতো ফেরি করে চলেন দিল্লির কবিতা স্বপ্নমালা । দিল্লির লেখকদের মধ্যে ছিলো অন্য উন্মাদনা, রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গানের মাঝে দিল্লির কবিদের উজ্বল উপস্থিতি ।
সমস্ত কবি / লেখকদের একে এক ওয়েবসাইটের ইউ আর এল ( URL : http://www.dehlij.com ) তুলে দেওয়া হয় । পার্টিসিপেশন ছিলো স্বতস্ফউর্ত , সাড়া ছিলো দারুন ।
উল্লাস আর হৈ হৈ দিয়ে যাত্রা শুরু হলো দিল্লির কবিতার ডিজিটাল যুগ । প্রচুর লেখক জুড়ে যাচ্ছেন । দিল্লির দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের কবি লেখকেরাও জুড়ে গেছেন দিল্লির বাংলা সাহিত্য গ্রুপে ।
যোগাযোগের জন্য ঃ poet.area@gmail.com এ মেল করুন । কথা বলা যায় যে কোন সদস্যদের সঙ্গে ।
দিল্লির বাংলা সাহিত্য
আপনারা জানেন দিল্লির বাংলা সাহিত্য গ্রুপের নিজস্ব ওয়েবজিন বের হবে । কাজটি বেশ চ্যালেঞ্জের । কিন্তু চ্যালেঞ্জ মানেই উচ্চমান্যতা , সম্মান, ইতিহাস । যদি আপনারা আশ্বাস দেন দিল্লি থেকে এই বাংলা সাহিত্যের কাজ বেশ ভালো লাগছে তবে এই প্রয়াস আরো জোর কদমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা আমরা ভাবি ।
প্রথম যে কথা দিয়ে শুরু করতে চাই হলো, তা হল, "সাহায্য চাই, যোগদান চাই" । আমি যদিও গ্রউপের এই কাজটি এতদিন ধরে একা করে আসছি, কিন্তু সত্যি বলছি, একা এত বড় কাজ করা খুব কঠিন । । আমি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে আটকে যাচ্ছি - তার কিছুটা টেকনিক্যাল, কিছুটা সময়, কিছুটা যোগাযোগ । কাজটা যেহেতু সাহিত্যপ্রেমীদের, টাকা পয়সার সমস্যা নাই ।
আপনারা অনেকেই আমার থেকে বয়োজ্যোষ্ঠ এবং সাহিত্যকর্মী হিসাবেও বেশী অভিজ্ঞ । যে হেল্প আমার দরকার তা হলো জনসংযোগ । তার যতটুকু করতে পারবেন, ততটুকুই গ্রুপের জন্য অনেক ।
আমি যদি কারো কাছে কোন সাহায্যের জন্য হাত বাড়াই, কেউ কি ফিরিয়ে দেবেন ? যিনি রাজী আছেন, আমার সঙ্গে আছেন, আমাকে একটা গোলাপ দিয়ে যাবেন । আমি বুঝবো যে আমি নিসংকোচে আপনার কাছে সাহায্য চাইতে পারি ।
আমাদের এই সাহিত্য প্রয়াসে কমপিটার জানা খুব জরুরী । ইমেল করা, ইউনিকোড টাইপ করা, ব্লগ এডমিনিস্ট্রেশন, সোসাল মিডিয়া হ্যান্ডলিং, গুগল অপটিমাইজেশন, সাইট ভিজিটর ম্যানেজমেন্ট জানা খুব প্রয়োজন । আগামী পৃথিবীর জন্য আপনার সাহিত্যকর্মগুলি রেখে যেতে চাইলে আপনার সাহিত্যকর্ম ডিজিটাল করা ছাড়া উপায় নেই । যা কিছু প্রিন্টেড বই আপনার সংগ্রহে থাকছে তা আগামী ৫০ বছরেই হারিয়ে যাবে । যে পত্রিকাগুলি গুদামে, বেসমেন্টে পড়ে আছে তা আগামী ৭০ বছরে তার অবস্থান অনিশ্চিত । তাই এই মুহূর্তে আমাদের সাহিত্যকর্মকে ডিজিটাল রূপ দেওয়া খুব জরুরী । যারা আজ ও আগামীর সাহিত্য নিয়ে কাজ করতে চাইছেন, এই কমিউনিটি থেকে আপনি সাহায্য পাবেন । দিল্লির এই সময়কার সাহিত্যগুলির একটা ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট তৈরী করা দরকার । শুধু ডিজিটাইজড লেখা পরবর্তী জেনারেশনের জন্য সুরক্ষিত থাকবে ।
দিল্লির পক্ষে দেহ্লিজ একটি স্ট্রং পদক্ষেপ । দিল্লির হাতে গোনা লিটল ম্যাগাজিন, ওয়েবজিন, তাদের দুএকটি ম্যাগাজিন ছাড়া প্রায় পত্রিকাগুলি অনিয়মিত, এবং তা চরম ভাবেই স্বাভাবিক । এটাই দিল্লির বাংলা সাহিত্যের বৈশিষ্ট্য । দিল্লির কি নিজস্ব সাহিত্য চরিত্র থাকতে পারে ? সাহিত্যে কি ভৌগলিক বলে কিছু হয় ? যেখানে ভাষাটা এক ।
এ এমন একটা জরুরী বিষয়, যেখানে কোন স্ট্যাম্প মারা সিদ্ধান্ত দেওয়া যাচ্ছে না দিল্লি বাংলা সাহিত্যের কাছে বিরাট কিছু দৃষ্টান্ত, কিন্তু একটা বিশ্বাস তো করাই যায় যে দিল্লির নিজস্ব একটা বিষয় আছে ? বৃহত্তর বৃত্ত থেকে আলাদা করে ক্ষুদ্রতর গণ্ডির ভিতর কিছু কি সৃষ্টিশীল থাকতে পারে ?
ডায়াস্পোরা নিয়ে কথা হয়, দিল্লির বাংলা শব্দে হরিয়ানভি ঠাট্ , বরিশালের গাংচিল আর রংপুরের লালমাটির মত স্পষ্ট । তো জাহির হে, বাংলাকে শুদ্ধ বাংলা বলতে যত প্রয়াসই হোক, আমরা আরাবল্লির মাটির গন্ধকে কি করে ভুলে যাই ?
তাহলে দিল্লি থেকে এতদিন ধরে আর কি লিখছি আমরা ?
কিছুটা ক্লোন, কিছুটা স্মৃতি, নাকি ঢাকা কলকাতা থেকে আগত সাংস্কৃতিক চর্চা । এটা দিয়েই শুরু, কিন্তু এইভাবে রিং রোড বরাবর হাঁটতে থাকলে আপনি একটা ডেভিয়েশন দেখতে পাবেন, জলবায়ু থেকে কিভাবে জলীয়বাষ্প উধাও । এই শহরে এসে ঘিরে বসেছে রাজধানী , সি আর পার্ক, কালকাজী , গোল মার্কেট, কারোল বাগ, দ্বারকা, মহাবীর এনক্লেভ, নয়ডার বিভিন্ন সেক্টরে বাঙালি কলোনী । ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বাংলা বসতি । লোক মুখে শোনা বাইশ লক্ষ বাঙ্গালির বাস । তো এতো বাঙ্গালী দুই দুটো বাংলা(প্র)দেশ থাকা স্বত্বেও এখানে কি করছে ?
যেটা করছে, সেটা উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, বিহারেও করছে । যেটা নিয়ে তর্ক সেটা রাজনৈতিক, যেটা নিয়ে সমস্যা সেটা জনসংখ্যা, যেটা নিয়ে প্রশ্ন সেটা খাদ্য আর যেটা নিয়ে যাপন তা হল বাংলা । সুতরাং যেটা হারালো , সেটা দেশ, যেটা আক্রান্ত সেটা ভাষা, আর যেটা নিয়ে বাঁচা তা হল বিশ্বাস , তা হল নিজস্বতা । আমাদের নিজের কি কোন চরিত্র আছে ?
আছে । বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর । একবার কুতুব মিনারের গায়ে হাত দিয়ে দেখুন, একবার যমুনায় পা ডুবিয়ে দেখুন, এক মধ্য রাতে ইন্ডিয়া গেট, এক দুপুরে খুনি দরবাজা , এক জানুয়ারিতে লোধী গার্ডেন, এক ফেব্রুয়ারিতে হুমায়ুন টমে বোঝা যায় ভারতবর্ষের কৈশোর, ইতিহাসের যৌবন, আর পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের অবয়ব রাইসিনা হিলস । এই হল দিল্লি ।
আর যারা আরাবল্লির মাটির গন্ধ পাননি, যমুনার জলে স্রোতের আওয়াজ শোনেননি, লাল কিলার পাথর ছুঁয়ে ইতিহাস অনুভব করেন নি , তিনি এতো বছর রন্ধ্রে রন্ধ্রে এই জলবায়ুর নমক খেয়েও এখনো দিল্লিকে গ্রহণ করে উঠতে পারেন নাই । না ঘরকা , না ঘাট কা ।
দেহ্লিজের জন্ম নিয়ে অনেক উন্মাদনা । দিল্লির পাথরবুকের সজীবতার ছোঁয়া । সুদূর ওমানীয় ধূলিঝড় উড়িয়ে নিয়ে গেলো পল্যুশন, রাজধানী একরকম আর দিলবাজী অন্যরকম, দিল্লির শাহী জলবায়ুতে কলার পুন প্রবেশের মাঝদিয়ে এই ডিজিটাল দৌড়ের সূচনা । তো জাহির, হে এখানে পলিটিক্সের পাশ ঠেলে দাঁড়িয়ে উঠেছে কবিয়ালের দেওয়াল ।
দেহ্লিজ, ডোমেনের আশেপাশে গড়ে উঠেছে, প্রথম সংখ্যায় পদার্পণ প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার । লেখক ছিল, ৩৭ জন । সমস্তই দিল্লির আয়োজন বললে তেমন ভুল বলা হয় না । দিল্লির লেখকদের বেশীর ভাগ মাইগ্রেটেড , কিছু দ্বিতীয় প্রজন্মের, কিছু তৃতীয় প্রজন্মের । আর কিছু পরিযায়ী । দিল্লির লেখক কমিউনিটি ডেভেলপ হচ্ছে দ্রুত । এর মাঝেই জন্ম নিলো দেহ্লিজ ।