কৌশিক সেন
Author / Editor : iPatrika Crawler

সপ্তপদী
সিঁদুরে মেঘ। ভয় পেও না। বরং গুড়ো মেঘ তুলে নাও চিমটে আঙুলে। সীমন্তিনী হও…
আলপথে রক্ত। এ কোন সেচ ব্যাবস্থা। ডিপ টিউবওয়েল রক্ত উগড়ে দেয় মাটির গভীর থেকে। যোনি রক্ত, সীমন্তিনী মেয়েটির…
তুমি তো আর ঘর পোড়া গরু নও, ভয় কিসের! সিঁথি রাঙাবার ইচ্ছে হলে ডেকো একবার।
আলপথ পেড়িয়ে দূরের স্বর্গে নিয়ে যাবো তোমায়…
দায়ভার
যদি মরে যাই, আমার মৃত্যুর জন্য তোমাকে দায়ি করে যাবো, কবিতা!
আমি তো নিমিত্ত মাত্র, সাবেক দুনিয়ায় একমাত্র তোমাকে উদ্ধৃত করেই রচিত হয়েছিল লোকায়ত বিরহ মিলনের প্রেমগাথা। সামুদ্রিক বাতাসে যতরকম শ্লেষ লেগে ছিল, সবটাই যতিচিহ্নের মতো গেঁথে গেছে তোমার সারা অঙ্গ প্রত্যঙ্গে। আমি শুধু বুক পেতে দিয়েছি ভরা পূর্ণিমার দুরন্ত কোটালে…
যদি ভেসে যাই, তুমি দায়ি থাকবে, কবিতা!
মৃত্যুর গভীরে আমি চিনিনা কাউকেই, ভূত ভবিষ্যৎ সকলই এক হয়ে দৃশ্যমান আজ…… এ কোন বিশ্বরূপ তুমি আমায় দেখালে, কবিতা! গাণ্ডিবের এক টঙ্কারেই এফোঁড় ওফোঁড় হল আমার পরমাত্মীয়ের বুক!
যদি পাপ করে থাকি, তা তোমারই জন্য, কবিতা!
সমস্ত শরীর জুড়ে অনন্ত শ্রমের স্বেদ্গন্ধ আজ। একটা একটা করে স্বেদবিন্দুতে ঢেলে দিলে নীল হেমলক! আগুন জ্বেলে দিলে সারা শরীরে। রাতের অন্ধকারে মালিনীর হাত থেকে সুগন্ধি বেলি ফুলের মালা ছিনিয়ে নিয়ে ঝাপ দিলাম অনন্ত যমুনায়, শরীরের জ্বালা মেটাবো বলে!
যদি নষ্ট হই, তুমিই দায়ী থাকবে, কবিতা!
এ কেমন দিন দিলে আমায়! চলন্ত শকটের গতিময়তায় রাস্তায় উপচে পরে গভীর মৃত্যুশোক। নিশাচর পক্ষীর শ্যেন দৃষ্টিতে আলোকিত হয় খানা খন্দ, পথ ঘাট। হাড়ের বাঁধুনি থেকে সরিয়ে নিলে অপরিহার্য ক্যালসিয়াম। কশেরুকার খিলানে খিলানে প্রতিষ্ঠা করলে নিবিড় ভারখয়ানস্ক!
যদি ভেঙে পড়ি হুড়মুড় করে, ধ্বংসস্তূপ থেকে যদি খুঁজে না পাওয়া যায় অবধারিত মণিকাঞ্চন, তুমিই দায়ী থাকবে কবিতা!
আমার কোনও নিজস্ব বলয় নেই, নেই কোনও একান্ত বায়ুমণ্ডল, কোনও কক্ষপথ নেই যে তোমায় প্রদক্ষিণ করি। গন্ধ নেই, বর্ণ নেই, স্বাদ নেই, সময় নেই, অসময় নেই, লক্ষ্য নেই, মোক্ষ নেই, অক্ষহীন, নিরাবলম্ব ঘুরে চলেছি অনন্ত মহাশুন্যে...
যদি ঝরে যায় অলক্ষে, জানতেও পারবেনা কেউ। তবু জানবে, তুমিই দায়ী...... কবিতা!!